সরল গতি কাকে বলে class 6

আজকের আর্টিকেলের মুল বিষয় হলো সরল গতি কাকে বলে class 6 সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে আমরা সরল গতি কাকে বলে উদাহরণ দাও, পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে class 6, পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে উদাহরণ, ঘূর্ণন গতি কাকে বলে class 6, বক্র গতি কাকে বলে class 6, বক্র গতি কাকে বলে উদাহরণ দাও এবং বার্ষিক গতি কাকে বলে class 6 বিষয়গুলো সম্পর্কেও জানবো।

সরল গতি কাকে বলে class 6

তাহলে দেরি না করে চলুন জেনে নেই সরল গতি কাকে বলে class 6 সম্পর্কে।

সরল গতি কাকে বলে class 6

যখন কোনো বস্তু একটি সরলরেখা বরাবর সোজা একই দিকে চলতে থাকে, তখন তার গতিকে সরল গতি বলা হয়। সরল গতির ক্ষেত্রে যে বস্তুর ওপর বল প্রয়োগ করা হবে সেই বস্তুটি দিক পরিবর্তন না করে সোজা একই দিকে চলতে থাকে।

সরল গতি হলো একটি বস্তুর এমন গতিকে বোঝায় যেখানে বস্তুটি একটি সোজা রেখা বরাবর চলে। এই প্রকার গতি কেবলমাত্র এক মাত্রায় ঘটে, অর্থাৎ বস্তুটির অবস্থান কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট রেখার উপর পরিবর্তিত হয়।

সরল গতির সংজ্ঞা:
যদি কোনো বস্তু একটি সোজা রেখার উপর দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে স্থান পরিবর্তন করে, তবে সেই গতিকে সরল গতি বলা হয়। এটি ইংরেজিতে Rectilinear Motion বা Linear Motion নামে পরিচিত।

সরল গতির বৈশিষ্ট্য:
এক মাত্রায় স্থানান্তর: বস্তুটি কেবলমাত্র একটি মাত্রায় বা সোজা রেখা বরাবর গতিশীল থাকে।
অবস্থান পরিবর্তন: বস্তুর অবস্থান সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়।
পথের প্রকৃতি: গতির পথ সবসময় সোজা হয়।
গতি প্রকারভেদ: সরল গতি স্থিরবেগে বা পরিবর্তনশীল বেগে হতে পারে।
সরল গতির ধরণ:
সরল গতি সাধারণত তিন প্রকার হতে পারে:

ইউনিফর্ম মোশন (সাধারণ গতি):
যখন কোনো বস্তু সমান সময়ে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে, তখন সেই গতিকে বলা হয় ইউনিফর্ম সরল গতি।
উদাহরণ: একটি গাড়ি যদি প্রতি সেকেন্ডে ১০ মিটার অতিক্রম করে, তাহলে তার গতি ইউনিফর্ম সরল গতি।

𝑠
=
𝑣
𝑡
s=v⋅t
যেখানে,
𝑠
s = অতিক্রান্ত দূরত্ব,
𝑣
v = বেগ,
𝑡
t = সময়।

নন-ইউনিফর্ম মোশন (অসামান্য গতি):
যখন কোনো বস্তু সমান সময়ে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে না, তখন সেই গতিকে বলা হয় অসামান্য সরল গতি।
উদাহরণ: যদি কোনো গাড়ি এক সেকেন্ডে ৫ মিটার এবং পরবর্তী সেকেন্ডে ১৫ মিটার অতিক্রম করে।

অভিকর্ষজনিত গতি:
অভিকর্ষের প্রভাবে কোনো বস্তু সরল পথে নেমে গেলে তাকে অভিকর্ষজনিত সরল গতি বলে।
উদাহরণ: একটি বল যখন উপর থেকে নীচে পড়ে।

সরল গতির উদাহরণ:
একটি সোজা সড়কে চলমান গাড়ি।
ফ্রি-ফলিং অবজেক্ট (যেমন, উপর থেকে নেমে আসা বল)।
ট্রেনের সোজা লাইনে চলা।
রকেটের উৎক্ষেপণ।
চিত্রসহ বিশ্লেষণ:
সরল গতির চিত্রটি এমন হতে পারে যেখানে একটি বস্তু সময়ের সাথে সাথে সোজা রেখার উপর অগ্রসর হচ্ছে। চিত্রে 
𝑥
x-অক্ষ বস্তুর অবস্থান নির্দেশ করে এবং 
𝑦
y-অক্ষ সময় নির্দেশ করে।

গাণিতিক বিশ্লেষণ:
সরল গতির ক্ষেত্রে প্রধানত দুটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে:

সাধারণ গতির সমীকরণ:

𝑠
=
𝑢
𝑡
+
1
2
𝑎
𝑡
2
s=ut+ 
2
1
 at 
2
 
যেখানে,
𝑠
s = স্থানান্তর,
𝑢
u = প্রাথমিক বেগ,
𝑎
a = ত্বরণ,
𝑡
t = সময়।

শেষ বেগ নির্ণয়ের সমীকরণ:

𝑣
=
𝑢
+
𝑎
𝑡
v=u+at
যেখানে,
𝑣
v = শেষ বেগ।

 
সরল গতিকে দুইভাবে ভাগ করা হয়। যথাঃ
 
  • সমবেগের সরলগতিঃ যখন কোনো বস্তু চলমান অবস্থায় একই গতিতে থাকে এবং তার গতির কোনো ধরনের পরিবর্তন না হয়, তখন তাকে সমবেগের গতি বলা হয়। যেমন- একটি গাড়ি যদি ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে একটানা চলতে থাকে, তখন সেই গতি হলো সমবেগের সরল গতি।
  • অসমবেগের সরলগতিঃ যখন কোনো বস্তুর বেগ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়, তখন তাকে অসমবেগের সরলগতি বলা হয়। যেমন- একটি গাড়ি কখনো ২০ কিলোমিটার বেগে আবার কখনো ৫০ কিলোমিটার বেগে চলতে থাকলে, তখন সেই গতিকে বলা হবে অসমবেগের সরলগতি। কারন এক্ষেত্রে গতি একই অবস্থায় স্থির থাকে না।

সরল গতি কাকে বলে উদাহরণ দাও

পূর্বে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6 তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো সরল গতির কিছু উদাহরন সম্পর্কে।
 
সরল গতি হলো সেই গতি যেখানে কোনো বস্তু একই দিকে সরলরেখা বরাবর সোজা চলতে থাকে। গানিতিক উদাহরনের মাধ্যমে সরল গতি সম্পর্কে সঠিক ধারনা দেয়া যাক।
 
সরল গতির সাধারন সুত্র হলো, S= vt (বেগ স্থির থাকলে)
 
এখানে, S হলো বস্তুর দুরত্ব, v হলো বস্তুর বেগ এবং t হলো সময়।
 
উদাহরনঃ স্থির অবস্থা থেকে একটি গাড়ি ১০ মিটার/সেকেন্ড গতিতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছালো। এক্ষেত্রে গাড়িটির সময় লেগেছে ৫ সেকেন্ড। তাহলে সরল গতির ক্ষেত্রে গাড়িটির দুরত্ব হবে,
S= vt
বা, S= 10 * 5
বা, S= 50 মিটার
 
আবার সরল গতির ক্ষেত্রে আরেকটি সুত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যদি বেগের পরিবর্তন হয়, তাহলে সরল গতির সুত্র নিম্নরুপ-
 
a= Δv/Δt
 
এখানে, a হলো ত্বরন, Δv হলো বেগের পরিবর্তন এবং Δt হলো সময়ের পরিবর্তন।

পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে class 6

পূর্বে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6 এবং তার উদাহরন সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে তা সম্পর্কে।

যেখানে একটি বস্তু একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রতে অবস্থান করে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর একই অবস্থানে ফিরে আসে এবং একই গতিপথ অতিক্রম করে, তখন সেই বস্তুর গতিকে পর্যায়বৃত্ত গতি বলে।
 
পর্যায়বৃত্ত গতির উদাহরন হলো দোলনা, তরঙ্গ, গোলাকার পথে কোনো চলমান বস্তু, ঘড়ির কাটা, ফ্যানের ঘূর্ণন ইত্যাদি। এইক্ষেত্রে সব ধরনের বস্তুই একই দিকে নির্দিষ্ট সময় পর পর ঘুরে আসে এবং একই পথ অনুসরন করে।

পর্যায়বৃত্ত গতি (Circular Motion) হলো সেই গতি যেখানে কোনো বস্তুর গতি একটি বৃত্তাকার পথের চারপাশে হয়, অর্থাৎ বস্তুর গতির পথ একটি বৃত্তের মতো। এই ধরনের গতি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রবিন্দু (center) থেকে সমান দূরত্বে ঘটে।

বৈশিষ্ট্য:

  1. কেন্দ্রের চারপাশে গতি: বস্তুর গতি কেন্দ্রের চারপাশে হয়, এবং এটি সবসময় একটি নির্দিষ্ট বৃত্তাকার পথ অনুসরণ করে।
  2. বেগ: বস্তুর গতির বেগ (speed) সম্ভবত সমান থাকতে পারে, কিন্তু এর গতি (velocity) পরিবর্তিত হয় কারণ এর দিক পরিবর্তন হয়।
  3. কেন্দ্রভূত ত্বরণ: বৃত্তাকার পথে গতি হতে থাকলে, বস্তুর উপর একটি "কেন্দ্রভূত ত্বরণ" (centripetal acceleration) প্রয়োগ হয়, যা বস্তুকে কেন্দ্রের দিকে টানে।
  4. কেন্দ্রভূত বল: বস্তুর গতি চালিয়ে যেতে কেন্দ্রের দিকে একটি বল প্রয়োগ করা হয়, যা কেন্দ্রভূত বল (centripetal force) নামে পরিচিত।

উদাহরণ:

  • পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে গতি: পৃথিবী সূর্যের চারপাশে বৃত্তাকার পথে (যা প্রকৃতপক্ষে একটি অ্যালিপটিক্যাল এলিপস) ঘোরে।
  • গোলক বল: একটি গোলক বা সেলফোন তার সুতার সাথে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে পারে।

পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে উদাহরণ

পূর্বে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6, সরল গতির উদাহরন এবং পর্যায়বৃত্ত গতি সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো পর্যায়বৃত্ত গতির উদাহরন সম্পর্কে।
 
পর্যায়বৃত্ত গতিকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ
 
  • সরল হারমোনিক গতিঃ এটি হলো এক বিশেষ ধরনের পর্যায়বৃত্ত গতি যেখানে একটি বস্তু একটি নির্দিষ্ট বিন্দুর চারিদিকে দোলায়মান অবস্থায় থাকে। এইক্ষেত্রে বস্তুটি সর্বোচ্চ স্থান থেকে ফিরে আসে আবার বিপরীত দিকে ফিরে যায়। উদাহরন- দোলনার গতি।
  • অসরল হারমোনিক গতিঃ এটি হলো এমন এক ধরনের গতি যেখানে একটি বস্তু পর্যায়বৃত্ত গতিতে চলে। কিন্তু বস্তুটির গতি সরল হারমোনিক গতিতে চলে না তাকে অসরল হারমোনিক গতি বলে। উদাহরন- রোলার কোস্টারের গতিপথ।
 
পর্যায়বৃত্ত গতির কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
 
  • পর্যায়বৃত্ত গতিতে একটি নির্দিষ্ট পর্যায়কাল থাকবে।
  • পর্যায়বৃত্ত গতি হবে এক ধরনের বৃত্তীয় গতি।
  • পর্যায়বৃত্ত গতিতে কম্পাংক থাকে।
  • পর্যায়বৃত্ত গতিতে স্থিতিস্থাপক বল থাকে।
 
গানিতিক উদাহরন দিলে পর্যায়বৃত্ত গতি সম্পর্কে সঠিক ধারনা পাওয়া যাবে। নিম্নে পর্যায়বৃত্ত গতির গানিতিক উদাহরন দেওয়া হলো।
 
পর্যায়বৃত্ত গতির সকল হারমোনিক গতির ক্ষেত্রে গতির অবস্থান x সময়ের সাথে সম্পর্কিত। অর্থাৎ,
 
X (t)= A cos (wt+θ)
 
এখানে, A হলো বিস্তার,
w হলো কৌনিক বেগ,
t হলো সময় এবং
θ হলো প্রাথমিক বেগ।

ঘূর্ণন গতি কাকে বলে class 6

পূর্বে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6, সরল গতির উদাহরন, পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে এবং এর উদাহরন সম্পর্কে জেনেছি। এখন চলুন জেনে নেই ঘূর্ণন গতি কাকে বলে তা সম্পর্কে।
 
  • যে ধরনের গতিতে একটি বস্তু নির্দিষ্ট একটি বিন্দুকে কেন্দ্র করে এর চারিপাশে একই রাস্তা বরাবর ঘুরতে থাকে, তাকে ঘূর্ণন গতি বলে। ঘূর্ণন গতির নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
  • ঘূর্ণন গতির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট অক্ষ থাকবে। যাকে কেন্দ্র করে বস্তু এর চারিপাশে ঘুরতে থাকে।
  • ঘূর্ণন গতির ক্ষেত্রে কৌনিক বেগ প্রয়োজন হয়। কারন কৌনিক বেগের মাধ্যমে বস্তু কত ডিগ্রি কোনে ঘুরছে তা সম্পর্কে জানা যায়।
  • ঘূর্ণন গতির ক্ষেত্রে কৌনিক ত্বরনের প্রয়োজন হয়। কারন এটি কৌনিক বেগের পরিবর্তনের হার নির্দেশ করে।
  • ঘূর্ণন গতির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট ঘূর্ণনকাল এর দরকার হয়।
  • ঘূর্ণন গতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো কৌনিক ভরবেগ।
 
এতক্ষন আমরা ঘূর্ণন গতির কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানলাম। এখন চলুন দেখে আসি কিছু ঘূর্ণন গতির উদাহরন সম্পর্কে। ঘূর্ণন গতির উদাহরন- পৃথিবীর ঘূর্ণন, বায়ুর ঘূর্ণন, ফ্যানের ঘূর্ণন, চাকার ঘূর্ণন ইত্যাদি।

ঘূর্ণন গতি (Rotational Motion) হলো একটি গতি যেখানে কোনো বস্তু এককেন্দ্র (axis) বা ধ্রুবক পয়েন্টের চারপাশে ঘোরে। এটি একটি বস্তুর পয়েন্টগুলোকে একটি নির্দিষ্ট অক্ষের (axis) চারপাশে ঘুরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া।

বৈশিষ্ট্য:

  1. অক্ষের চারপাশে গতি: ঘূর্ণন গতি একটি নির্দিষ্ট অক্ষ (axis) বা পয়েন্টের চারপাশে ঘটে। এই অক্ষের চারপাশে বস্তু ঘোরে এবং বস্তুটির প্রতিটি অংশ বিভিন্ন কোণগত গতিতে ঘুরতে থাকে।

  2. কোণগত বেগ (Angular Velocity): ঘূর্ণন গতির মধ্যে বস্তুটির প্রতি পয়েন্ট একটি নির্দিষ্ট কোণগত বেগ (angular velocity) থাকে, যা সময়ের সাথে কোণগত পরিবর্তন নির্দেশ করে। এটি সাধারণত ω\omega দ্বারা চিহ্নিত হয়।

  3. কোণগত ত্বরণ (Angular Acceleration): যখন একটি বস্তু ঘূর্ণন গতি অর্জন করে, তখন তার কোণগত বেগে পরিবর্তন ঘটতে থাকে, এবং এর পরিবর্তনকে কোণগত ত্বরণ (angular acceleration) বলা হয়।

  4. রৈখিক গতি ও ঘূর্ণন গতি: যখন একটি বস্তু ঘূর্ণন করে, তখন তার বাহ্যিক পয়েন্টগুলো রৈখিক গতিও অর্জন করে। এটি কেন্দ্র থেকে বাহিরে সোজা পথের সাথে সম্পর্কিত।

উদাহরণ:

  1. পৃথিবীর ঘূর্ণন: পৃথিবী তার অক্ষের চারপাশে প্রতিদিন ঘোরে, এবং এটি একটি ঘূর্ণন গতি উদাহরণ।
  2. চাকা বা হুইল: একটি ঘূর্ণমান চাকা বা হুইল একটি নির্দিষ্ট অক্ষের চারপাশে ঘোরে, এটি ঘূর্ণন গতির উদাহরণ।

বক্র গতি কাকে বলে class 6

পূর্বে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6, সরল গতির উদাহরন, পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে এবং এর উদাহরন ও ঘূর্ণন গতি সম্পর্কে জেনেছি। এখন চলুন জেনে নেই বক্র গতি কাকে বলে তা সম্পর্কে।
 
যে গতির ক্ষেত্রে বস্তু একটি নির্দিষ্ট পথে না চলে আকাবাকা পথ অনুসরন করে, তাকে বক্র গতি বলা হয়। বক্র গতির কিছু সাধারন বৈশিষ্ট্য থাকে। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
 
  • বক্ররেখা বরাবর গতি থাকবে।
  • বেগের দিক পরিবর্তিত হয়ে থাকবে।
  • কেন্দ্রাতিক বল কাজ করবে।
  • বক্র গতিতে ত্বরন উপস্থিত থাকবে।
  • বক্র গতিতে কৌনিক বেগ অবস্থান করবে।
 
কিছু উদাহরনের মাধ্যমে বক্র গতি সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা দেওয়া যাক। নিম্নে বক্র গতির উদাহরন দেওয়া হলো।
 
বৃত্তাকার পথে গাড়ির চলা, প্রকৃতিতে বস্তুর গতি, বৃত্তাকার পথে উপগ্রহের গতি, গোলকধাধার গতি ইত্যাদি হলো বক্র গতির উদাহরন।

বক্র গতি (Curvilinear Motion) হলো একটি গতি যেখানে কোনো বস্তু এক সরল পথের পরিবর্তে বাঁকা বা বক্র পথ অনুসরণ করে। এই ধরনের গতিতে, বস্তুটির গতির দিক এবং অবস্থান সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় এবং গতি একটি নির্দিষ্ট বক্রপথের অনুসরণ করে।

বৈশিষ্ট্য:

  1. বক্র পথ: বক্র গতি ঘটে একটি বাঁকা বা সাঁকো পথের মধ্যে, যা সরল পথে নয়। বস্তুটির চলাচল এক স্থানে সরল পথে না গিয়ে বাঁকা পথে চলে।

  2. দিক পরিবর্তন: বক্র পথে চলাচল করার সময়, বস্তুটির গতির দিকও সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়, কারণ তার গতির পথ বাঁকা থাকে।

  3. রৈখিক ও কোণগত গতি: বক্র গতিতে, বস্তুটির একটি অংশ রৈখিক গতি পায় এবং অন্য অংশ কোণগত গতি গ্রহণ করতে পারে, তবে দুইটি গতি একত্রে কাজ করে।

উদাহরণ:

  1. গাড়ির বাঁক নেয়ার সময়: একটি গাড়ি যখন সোজা পথ থেকে বাঁক নেয়, তখন তা একটি বক্র গতি অনুসরণ করে।
  2. কেনট্রি ফোর্সের প্রভাবে বস্তুর গতি: যদি একটি বস্তুকে একটি বাঁকা পথের দিকে টানা হয়, যেমন একটি বল চাকা বা ধ্রুবক গতিতে ঘুরছে, এটি একটি বক্র গতি হয়।
  3. ধ্রুব গতি (Projectile Motion): একটি বস্তু যখন আকাশে নিক্ষিপ্ত হয়, তখন এটি বক্র পথে চলতে থাকে, এবং তার গতির দিক পরিবর্তিত হয়

বার্ষিক গতি কাকে বলে class 6

পূর্বে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6, সরল গতির উদাহরন, পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে, এর উদাহরন, ঘূর্ণন গতি এবং বক্র গতি সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো বার্ষিক গতি কাকে বলে তা সম্পর্কে। 

যখন কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট গতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একবার একটি পূর্ণ চক্র সম্পন্ন করে, তখন সেই গতিকে বার্ষিক গতি বলা হয়। বার্ষিক গতির কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন-
 
  • বার্ষিক গতির একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য হলো বস্তুর নিয়মিত আবর্তন।
  • বার্ষিক গতিতে একটি নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথ থাকবে।
  • বার্ষিক গতির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট অক্ষের ঢাল থাকে।
  • ঋতুর পরিবর্তনের সাথে অক্ষের ঢাল এবং বার্ষিক গতির সম্পর্ক থাকে।
  • দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের সাথে বার্ষিক গতির সম্পর্ক থাকে।

বার্ষিক গতি (Annual Motion) হলো পৃথিবীর সেই গতি, যেখানে এটি সূর্যের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে। এটি একটি পর্যায়বৃত্ত গতি যা সম্পন্ন হতে প্রায় ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা সময় লাগে। এই গতি সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুর্ণন বোঝায় এবং এর কারণে ঋতু পরিবর্তন হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  1. কক্ষপথ: পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার (elliptical) কক্ষপথে ঘোরে।

  2. সময়কাল: পৃথিবীর সূর্যকে একবার পুরোপুরি প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে প্রায় ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টা। এই অতিরিক্ত ৬ ঘণ্টা প্রতি চার বছর পর একটি দিন যোগ করে (লিপ ইয়ার)।

  3. ঋতু পরিবর্তন: পৃথিবীর অক্ষ (axis) ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকার কারণে, বার্ষিক গতির সময় সূর্যের আলো বিভিন্নভাবে পৃথিবীতে পড়ে। এর ফলে ঋতু পরিবর্তন ঘটে।

  4. গতি: পৃথিবীর বার্ষিক গতি প্রায় ২৯.৭৯ কিমি/সেকেন্ড (৩০ কিমি/সেকেন্ড এর কাছাকাছি) গতিতে হয়।

  5. গ্রহগত গতি: পৃথিবীর বার্ষিক গতি একটি বৃহত্তর গ্রহগত গতির অংশ, যেখানে সৌরজগতে অন্যান্য গ্রহও সূর্যের চারপাশে তাদের নিজস্ব কক্ষপথে আবর্তন করে।

লেখকের মন্তব্য - সরল গতি কাকে বলে class 6

আজকের আর্টিকেলে আমরা সরল গতি কাকে বলে class 6, সরল গতির উদাহরন, পর্যায়বৃত্ত গতি কাকে বলে, এর উদাহরন, ঘূর্ণন গতি এবং বক্র গতি সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো বার্ষিক গতি কাকে বলে তা সম্পর্কে জেনেছি।
 
আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন। প্রতিনিয়ত এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইট ফলোও করুন। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url