মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও
আজকের আর্টিকেলের মুল বিষয় হলো মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও তা সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের আর্টিকেলে আমরা মিশ্র ভগ্নাংশের সূত্র কি, মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ সংখ্যাকে কি বলে এবং মোল ভগ্নাংশ নির্ণয়ের সূত্র সম্পর্কেও জানবো। আশা করি শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন।
তাহলে দেরি না করে চলুন জেনে নেই মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও তা সম্পর্কে।
মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও
যে ভগ্নাংশে একটি পূর্ণসংখ্যা এবং একটি সাধারন ভগ্নাংশ একসাথে থাকে, তাকে মিশ্র ভগ্নাংশ বলে। অর্থাৎ পূর্ণসংখ্যা এবং ভগ্নাংশের সমন্বয়ে যে নতুন ভগ্নাংশ তৈরি হয়, তাকেই মিশ্র ভগ্নাংশ বলা হয়। উদাহরনের মাধ্যমে মিশ্র ভগ্নাংশকে আরও সহজভাবে উপস্থাপন করা যায়। যেমনঃ-২*১/৩ সংখ্যার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এখানে ২ হলো একটি পূর্ণসংখ্যা এবং ১/৩ হলো ভগ্নাংশ। এই ধরনের ভগ্নাংশকে মিশ্র ভগ্নাংশ বলা হয়।
মিশ্র ভগ্নাংশকে সাধারন ভগ্নাংশে রুপান্তরের অনেকগুলো নিয়মের মধ্যে একটি হলো সাধারন নিয়ম। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
পূর্ণসংখ্যা + লঘু / গুনক, এখানে পূর্ণসংখ্যা হচ্ছে মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ অংশ এবং লঘু ও গুনক হচ্ছে ভগ্নাংশের লব ও হর।
উপরোক্ত সুত্র ছাড়াও মিশ্র ভগ্নাংশকে সাধারন ভগ্নাংশে রুপান্তর করার আরও কিছু সুত্র আছে। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
সাধারন ভগ্নাংশ= (পূর্ণসংখ্যা * গুনক) + লঘু / গুনক
মিশ্র ভগ্নাংশের গঠনে একটি পূর্ণসংখ্যা থাকবে এবং একটি ভগ্নাংশ থাকবে। মিশ্র ভগ্নাংশকে অনেক সময় সাধারন ভগ্নাংশে রুপান্তর করতে হয়। সেক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে রুপান্তর করতে হয়। নিয়মসমুহ নিম্নরুপঃ
- প্রথমে পূর্ণসংখ্যার গুনকে ভগ্নাংশের গুনকের সাথে গুন করতে হয়।
- গুনফল যেটা বের হবে তার সাথে ভগ্নাংশের লঘুর মান যোগ করতে হয়।
- সবশেষে নতুন যে মান পাওয়া যায় তা পুরনো গুনকের সাথে রেখে দিয়ে নতুন ভগ্নাংশ তৈরি করতে হয়।
একটি উদাহরন দিয়ে বোঝালে বিষয়টি সহজে বোঝা যায়। নিম্নে উদাহরন দেওয়া হলো।
২*১/৩ সংখাটিতে ২ হলো একটি পূর্ণসংখ্যা এবং ১/৩ হলো ভগ্নাংশ। এবার পূর্ণসংখ্যার সাথে ভগ্নাংশের হর গুন দিতে হবে এবং তার সাথে লব যোগ দিতে হবে। অর্থাৎ বিষয়টি দাঁড়ায়, ২*৩+১=৭। তাহলে এক্ষেত্রে নতুন ভগ্নাংশ হবে ৭/৩।
মিশ্র ভগ্নাংশের সূত্র কি
পূর্বে আমরা মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো মিশ্র ভগ্নাংশ বের করার সুত্র বা নিয়ম সম্পর্কে।মিশ্র ভগ্নাংশকে সাধারন ভগ্নাংশে রুপান্তরের অনেকগুলো নিয়মের মধ্যে একটি হলো সাধারন নিয়ম। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
পূর্ণসংখ্যা + লঘু / গুনক, এখানে পূর্ণসংখ্যা হচ্ছে মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ অংশ এবং লঘু ও গুনক হচ্ছে ভগ্নাংশের লব ও হর।
উপরোক্ত সুত্র ছাড়াও মিশ্র ভগ্নাংশকে সাধারন ভগ্নাংশে রুপান্তর করার আরও কিছু সুত্র আছে। যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
সাধারন ভগ্নাংশ= (পূর্ণসংখ্যা * গুনক) + লঘু / গুনক
এইক্ষেত্রে প্রথমে পূর্ণসংখ্যাকে ভগ্নাংশের গুনক অর্থাৎ হরের সাথে গুন দিতে হবে। এরপর যে মান বের হবে তার সাথে ভগ্নাংশের লব যোগ করতে হবে। এবার যোগফলকে লব আকারে এবং ভগ্নাংশে থাকা পূর্বের হর একইভাবে রেখে দিতে হবে। চলুন উদাহরনের সাহায্যে বিষয়টি সহজভাবে বোঝা যাক।
একটি মিশ্র ভগ্নাংশ হলো ২*৩/৪
- প্রথমে পূর্ণসংখ্যাকে ভগ্নাংশের গুনক অর্থাৎ হরের সাথে গুন দিতে হবে অর্থাৎ ২*৪=৮ ।
- এবার প্রাপ্ত মানের সাথে ভগ্নাংশের লব যোগ করতে হবে অর্থাৎ, ৮ + ৩ = ১১ ।
- এবার যোগফলকে লব আকারে এবং ভগ্নাংশে থাকা পূর্বের হর একইভাবে রেখে দিতে হবে অর্থাৎ, ১১/৪ ।
এটিই হলো মিশ্র ভগ্নাংশকে সাধারন ভগ্নাংশে রুপান্তর প্রক্রিয়া।
মিশ্র ভগ্নাংশের মুল সুত্র হলো, মিশ্র ভগ্নাংশ = (পূর্ণসংখ্যা * গুনক) + লঘু / গুনক।
মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ সংখ্যাকে কি বলে
পূর্বে আমরা মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও এবং মিশ্র ভগ্নাংশের বিভিন্ন সুত্র সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো মিশ্র ভগ্নাংশে যে পূর্ণ সংখ্যা থাকে তাকে কি বলা হয় তা সম্পর্কে।মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ সংখ্যাকে বলা হয় পূর্ণসংখ্যা অংশ বা পূর্ণ অংশ।
মিশ্র ভগ্নাংশে একটি পূর্ণ সংখ্যা এবং একটি ভগ্নাংশ থাকে।
মিশ্র ভগ্নাংশের গঠন:
মিশ্র ভগ্নাংশ একটি ভগ্নাংশের মতো, যেখানে:
- একটি পূর্ণ সংখ্যা অংশ থাকে।
- একটি ভগ্নাংশ অংশ থাকে।
উদাহরণস্বরূপ:
হল একটি মিশ্র ভগ্নাংশ, যেখানে:
- হলো পূর্ণ সংখ্যা অংশ।
- হলো ভগ্নাংশ অংশ।
পূর্ণসংখ্যা অংশ:
- মিশ্র ভগ্নাংশের মধ্যে যে পূর্ণ সংখ্যা থাকে, সেটিই পূর্ণসংখ্যা অংশ।
- এটি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সংখ্যা যা ভগ্নাংশের সাথে মিলিত হয়ে পুরো সংখ্যার মান দেয়।
উদাহরণ:
ধরা যাক, একটি মিশ্র ভগ্নাংশ:
- এখানে ৫ হল পূর্ণসংখ্যা অংশ।
- হলো ভগ্নাংশ অংশ।
সুতরাং:
মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণসংখ্যা অংশ হচ্ছে সেই পূর্ণ সংখ্যা, যা ভগ্নাংশ অংশের সাথে যোগ করা হয় এবং পুরো সংখ্যার মান তৈরি হয়।
মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ সংখ্যাকে পূর্ণাংশ বলা হয়। ধরি একটি মিশ্র ভগ্নাংশ হলো ৩*২/৩ । এখানে পূর্ণসংখ্যা হলো ৩, যাকে পূর্ণাংশ বলা হয়। অপরদিকে ২/৩ কে ভগ্নাংশ বলা হয়।
মোল ভগ্নাংশ নির্ণয়ের সূত্র
পূর্বে আমরা মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও, মিশ্র ভগ্নাংশের বিভিন্ন সুত্র এবং মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ সংখ্যাকে কি বলা হয় তা সম্পর্কে জেনেছি। এখন চলুন জেনে নেই মোল ভগ্নাংশ নির্ণয়ের নিয়ম বা সুত্র সম্পর্কে।একটি ভগ্নাংশের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমানে যেকোনো উপাদানের মোল সংখ্যা বিদ্যমান থাকে এবং মিশ্রনের মধ্যে মোট মোলের সংখ্যার একটা অনুপাত থাকে।
এই উপাদানের মোলের সংখ্যা এবং মিশ্রনে মোট মোলের সংখ্যার অনুপাতকে মোল চগ্নাংশ বলা হয়। মোল ভগ্নাংশের মান সবসময় ০ থেকে ১ এর মধ্যে হয়ে থাকে।
মোল ভগ্নাংশের সুত্র হলোঃ Xi= ni/ntotal ।
এখানে Xi হলো মিশ্রনে থাকা নির্দিষ্ট উপাদানের i-এর মোল ভগ্নাংশ। ni-হলো নির্দিষ্ট উপাদানের মধ্যে থাকা i-এর মোলের সংখ্যা। ntotal-হলো মিশ্রনে মোট মোলের সংখ্যা।
লেখকের মন্তব্য - মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও
আজকের আর্টিকেলে আমরা মিশ্র ভগ্নাংশ কাকে বলে উদাহরণ দাও, মিশ্র ভগ্নাংশের বিভিন্ন সুত্র, মিশ্র ভগ্নাংশের পূর্ণ সংখ্যাকে কি বলা হয় এবং মোল ভগ্নাংশ নির্ণয় করার সুত্র সম্পর্কে জেনেছি।আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। প্রতিনিয়ত এই ধরনের আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইট ফলোও করুন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url